
Click to open expanded view
About the Book: Prayaschitta Tatwam: প্রায়শ্চিত্ততত্ত্ব” এই কথাটী শুনিলেই যাহাতে প্রায়শ্চিত্তের কথা বিস্তৃতভাবেআলোচিত হইয়াছে, এইরূপ গ্রন্থই লোকের মনে সমুদিত হয়। বস্তুতঃ তাহাই। ইহাতে নানাবিধ পাপের প্রায়শ্চিত্তের কথাই আলোচিত হইয়াছে। যে সকল কর্ম্মের দ্বারা মনুষ্যদিগের ঐহিক ও জন্মান্তরীণ পাপের ক্ষয় হয়, তাহাদের নামই প্রায়শ্চিত্ত। পাপ নানাবিধ; সুতরাং সেই পাপের ক্ষয়কারক প্রায়শ্চিত্তরূপ কৰ্ম্মও নানাবিধ; এই গ্রন্থে কীদৃশ ব্যক্তির কিরূপ পাপানুষ্ঠানে কিরূপ প্রায়শ্চিত্ত করিতে হইবে, তাহাই বিস্তৃতভাবে আলোচিত হইয়াছে। এক্ষণে পাপকর্ম্মের অনুষ্ঠানকারী যেমন রাজদ্বারে দণ্ডিত হয়, আর্যযুগে পাপকারীর উপর রাজদ্বারে সেইরূপ দণ্ডবিধান থাকিলেও তাহার আত্মশুদ্ধির জন্য প্রায়শ্চিত্তেরও বিধান করা হইয়াছে। ঋষিগণ মূল সংহিতা গ্রন্থে প্রায়শ্চিত্তের উল্লেখ করিলেও একমাত্র যাজ্ঞবন্ধ্যের সংহিতা ছাড়া অপর কোনও একখানি গ্রন্থে তদনুসারে যথাক্রমে প্রায়শ্চিত্তের বিধি ইত্যাদি ক্রমানুসারে প্রায়শ্চিত্ততত্ত্বটী মূল সংহিতাগ্রন্থে প্রদর্শিত হয় নাই; কাজেই কেবল পরবর্ত্তী মহামহোপাধ্যায় আচার্য্য্যগণ মূল সংহিতা গ্রন্থ হইতে বচন প্রমাণ সংগ্রহ করিয়া পাপসংশোধক আইনের মত এক একখানি প্রায়শ্চিত্তবিষয়ক শৃঙ্খলাবদ্ধ নিবন্ধ রচনা করিয়াছেন,–যেমন শূলপাণির প্রায়শ্চিত্তবিবেক, রঘুনন্দনের প্রায়শ্চিত্ততত্ত্ব ইত্যাদি, ইত্যাদি। এই সকল গ্রন্থে পাপভেদে, বর্ণভেদে, বয়সভেদে এবং ব্যক্তিভেদে পাপীর কিরূপ প্রায়শ্চিত্ত কৰ্ত্তব্য, কীদৃশ পাপকারী প্রায়শ্চিত্ত করিয়া সমাজে ব্যবহার্য্য হইবে এবং কীদৃশ পাপকারী যথাবিহিত প্রায়শ্চিত্ত করিয়াও সমাজে ব্যবহাৰ্য্য হইতে পারিবে না এবং পাপ কত প্রকার ইত্যাদি বিষয়ের সুশৃঙ্খলভাবে আলোচনা করা হইয়াছে। প্রসঙ্গক্রমে গঙ্গার মাহাত্ম্য ও তীর্থযাত্রা প্রভৃতিরও আলোচনা করা হইয়াছে। এই প্রায়শ্চিত্ততত্ত্বখানি পাপশুদ্ধির জন্য একখানি উপাদেয় গ্রন্থ। ইংরাজগণের রাজত্বের পূর্ব্ব অবধি এই প্রায়শ্চিত্ততত্ত্বই বর্ণাশ্ৰমীদিগের একখানি একমাত্র পাপশোধক নিবন্ধ বর্ত্তমান ছিল, একথা বলিলে বোধ হয় অত্যুক্তি হইবে না।